ফ্রী ডাউনলোড করুন –লক্ষীপুর ব্র্যান্ডিং বই

(0 User reviews)   607
জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক লক্ষীপুর 2018
যে ভূখন্ড নিয়ে বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলা অবস্থিত তার আদি চিত্র এ রকম ছিল না। অধিকাংশ স্থানে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গমালা ক্রীড়ায় মত্ত থাকত। বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ তাঁর ‘সিউতী’ নামক ভ্রমণ বৃত্তান্তে ‘কমলাঙ্ক’কে সমুদ্র তীরবর্তী বলে বর্ণনা করেছেন। ‘কমলাঙ্ক’ বর্তমানে কুমিল্লা ও পূর্ববর্তী ত্রিপুরা জেলার প্রাচীন নাম। কবি কালিদাস তাঁর ‘রঘু বংশ’ কাব্যে ‘সুষ্মি দেশকে’ ‘তালিবন শ্যামকণ্ঠ’ বলে অভিহিত করেছেন। কুমিল্লা জেলার দক্ষিণাংশ এবং নোয়াখালীর উত্তরাংশকে ‘সুষ্মি দেশ’ বলে বুঝিয়েছেন। প্রাচীনকাল থেকে এ এলাকা সমূহে প্রচুর তালবৃক্ষ জন্মে। কথিত আছে, ত্রয়োদশ শতকের প্রথম দশকের গোড়ার দিকে ভুলুয়া রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বস্বর শুর মুর্শিদাবাদ থেকে চট্টগ্রামে (চাটগাঁও) নৌকা যোগে চন্দ্রনাথ তীর্থ দর্শনে যাবার পথে এ অঞ্চলে আসেন। এটি ছিল নিশ্চিতই নতুন জাগা চর। হয়তো তৎকালে ত্রিপুরা জেলার সাথে সম্পৃক্ত রায়পুর ও রামগঞ্জের উত্তরের ক্ষুদ্রতম কোন একাংশ প্রাচীন ভূখন্ড ছিল। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার অধিকাংশ ভূমি, নদী বা সমুদ্র গর্ভ থেকে ক্রমশ চর বা দ্বীপ হিসেবে জেগে উঠে।এ জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকার নামে সাথে চর, দ্বী, দি, দিয়া যুক্ত হয়। যে সব এলাকার সাথে পুর বা গঞ্জ যুক্ত হয়েছে সেগুলিও প্রাচীনতম নয়। নতুন বসতি স্থাপনকারিগণ এসব যুক্ত করেছেন।

বিনামূল্যে বইটি পড়তে ও ফ্রি ডাউনলোড করতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন...
>ফ্রী ডাউনলোড করুন – লক্ষীপুর জেলা ব্র্যান্ডিং বই

 মাত্র ২ শত বছর পূর্বে এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি প্রত্যক্ষ করে স্কটিশ ভ্রমণকারী ড. ফ্রান্সিস বুকানন লিখেছেন (২ মার্চ ১৭৯৮) ‘‘সম্ভবত বিভিন্ন সময় চর ছিল অথবা এমনও হতে পারে এ অঞ্চল নদীর বালুকা নিয়ে গড়ে উঠেছে। সব জায়গায় মাটি নরম, ঢিলেঢালা; তার সঙ্গে মিশ্রিত আছে অভ্রাল বালু কণা এবং এ মাটির স্তর বিন্যস্ত নয়। তাছাড়া কাদামাটি এখানে নেই বললেই চলে। (৫ মার্চ ১৭৯৮) পাতা হাট (চরপাতা, রায়পুর) এবং লক্ষ্মীপুরের মধ্যবর্তী অঞ্চলে যে রকম চাষাবাদ করা হয়েছে, লক্ষ্মীপুর এবং নোয়াখালীর মধ্যবর্তী এলাকা অতটা আবাদি নয়। গাছ গাছালির ফাঁকে ফাঁকে গ্রামীণ মানুষের বসত বাড়ি বেশ ছাড়া ছাড়া এবং অনেক অঞ্চল এখনও প্রাকৃতিক অবস্থায় পড়ে আছে। পাতা হাটের তুলনায় এখানকার জমিন নিচু এবং প্রত্যেক ডোবা সুন্দরবনের গাছ গাছালিতে ভরা।’’ নোয়াখালীর ইতিহাস লেখক প্যারী মোহন সেন (১৯৪০)-এর বর্ণনায় দেখা যায় যে, ‘‘লক্ষ্মীপুর অঞ্চল এক সময় বঙ্গোপসাগরের অংশ ছিল। এক সময় যে স্থানে ভীষণ ঊর্মিমালা উত্থিত হইয়া মানবের ভীতি সঞ্চার করিত, সেই স্থান এক সময়ে অর্ণবচরগণে পরিব্যাপ্ত ছিল। অধুনা সেই স্থানে বহু সংখ্যক মানব সুখে সাচ্ছন্দ্যে কালাতিপাত করিতেছে।’’ ড. কাদের (১৯৯১)-এর বর্ণনায় দেখা যায়, ‘ফেনী নদীর পশ্চিম মেঘনা নদীর পূর্ব, ত্রিপুরা (কুমিল্লা) জেলার অন্তর্গত মেহারেরদক্ষিণ এই বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগই সমুদ্র গর্ভজাত।’ এখানে নতুন ভূমি জেগে উঠলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ চাষাবাদ উপলক্ষে এবং আরব দেশের বহিরাগতরা ব্যবসা বাণিজ্য ও ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে জনবসতি গড়ে তোলে। তারপর মেঘনা নদী ভাঙা-গড়ার মধ্যে এবং প্রতিকূল প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে করে লক্ষ্মীপুরের মানুষ টিকে আছে। এক সময়ের সমৃদ্ধ নগরী ইসলামাবাদ মেঘনা নদীর গর্ভে বিলীন হয়, কালক্রমে নদী গর্ভে আরো বিলুপ্ত হয় সমুদ্র উপকূলবর্তী ও মেঘনা নদীর তীরবর্তী অনেক জানা-অজানা প্রসিদ্ধ জনপদ ও শহর-বন্দর ইবনে বতুতার বর্ণনায় যার উল্লেখ আছে।

There are no reviews for this eBook.

0
0 out of 5 (0 User reviews )

Add a Review

Your Rating *

Related eBooks